ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের লেভেল-২/টার্ম-১ এর Design Studio III (Ergonomics and Abstract Forms) কোর্সের একটা অনলাইন জুরি হবে।


ইশতিয়াক আহমেদঃ আগামীকাল বুধবার, ২০/৫/২০২০ তারিখ বেলা ১১টা থেকে নেয়া হবে। এক্ষেত্রে আমরা জুরিটা পাবলিক রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্থাপত্যচর্চার সাথে সম্পর্কিত যে কেউ অনলাইনে আমাদের সাথে যোগ দিতে পারেন। আমার বন্ধুতালিকায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক ও সহকর্মীগণ আছেন, তারা বিশেষভাবে আমন্ত্রিত। আমাদের গেস্ট ক্যাপাসিটি আপাতত ২৫০ জন।

গুগল মিট কোডঃ https://meet.google.com/jme-nxju-wdk
Phone: +1 669-244-0141 PIN: 949 057 964#
[গুগল একাউন্ট ব্যবহারকারী যে কেউ এই লিংক ক্লিক করে জুরিতে যোগ দিতে পারবেন। কোন এপ/সফটওয়্যার ইন্সটল করা লাগবে না। মোবাইলে থেকে যোগ দিতে চাইলে Google Meet এপ এর মিটিং কোড এ যেয়ে উপরের কোড (jme-nxju-wdk) দিলেই হবে।]

এখন ২/১ এর জুরিতে ডাকা প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা প্রয়োজন বোধ করছি। স্থাপত্য শিক্ষার সাথে জরিত যে কেউ এই বিষয়ে একমত হবেন যে, ২/১ এর ডিজাইন কোর্সে শিক্ষার্থীরা মূলত বেসিক ফাংশনাল স্পেস নিয়ে কাজ শেখে যার মাধ্যমে তারা প্রথমবারের মত ডিজাইন কিভাবে করবে সেটার হাতেখড়ি পায়। এ সেমিস্টারটা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এখানে তাদের মোটামুটি হাতে ধরে কাজ করাতে হয়। এখন বর্তমান পরিস্থিতিতে এই কোর্স আমরা অনলাইনে নিতে বাধ্য হয়েছি। এবং যে প্রজেক্টের (Design of a Vacation House) জুরি হবে, সেটা সম্পূর্ণভাবেই অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে আমরা ছাত্রদের দিয়ে করিয়েছি। প্রজেক্ট ইন্ট্রোডাকশন থেকে শুরু করে ফাইনাল সাবমিশন পর্যন্ত ৬ সপ্তাহের পুরো ক্লাস অনলাইন সেশনের দ্বারা সম্পন্ন হয়েছে। শতভাগ যে শেখানো বা করানো সম্ভব সেটা অবশ্যই দাবী করা যাবে না। এরপরেও অনলাইনে আসলেই কতটুকু ডিজাইন নেয়া যায় (কিংবা শেখানো যায়) সেটা যাচাই করা যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, আমি স্থাপত্য শিক্ষার সাথে প্রায় ৭ বছর ধরে জড়িত। ড্যাফোডিল  বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শুরু থেকেই আছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫ থেকেই কমবেশি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার শুরু হয়, বিশেষত গুগল ক্লাসরুমে বিভিন্ন ক্লাস কন্টেন্ট শেয়ার, কুইজ, এসাইনমেন্ট ইত্যাদির সাথে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সবাই পরিচিত। এর মাঝে বছর দেড়েক ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব মুডল ডেভেলপমেন্ট এর কাজ চলছে। মার্চ ২০২০ এর একদম শুরুতে (৯ মার্চ,২০২০)  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আসন্ন দুর্যোগকালীন সময়ে অনলাইন ক্লাস নেয়ার জন্য প্রস্তুত হতে সবাইকে নির্দেশনা দেয়। এরপর আমরা মোটামুটি ১০/১২ দিন সময় পাই, যেসময়ে অনলাইন ক্লাস বিষয়ে শিক্ষকদের ট্রেইনিং ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। আমরা নিজ নিজ ডিপার্টমেন্ট এর শিক্ষার্থীদের শেষ কয়েকদিনে এ বিষয়ে প্রস্তুত করি (কোন কোন এপ চালাবে, কিভাবে চালাবে, কিভাবে পরীক্ষা দিবে, বাড়ি যাবার আগে কি কি জিনিস সাথে করে নিতে হবে ইত্যাদি)। এজন্য আমাদের অনলাইন ক্লাস নিতে তেমন কোন সমস্যা হয় নাই। বিশেষভাবে ছাত্রদের আগ্রহের জায়গাটায় ঘাটতি বেশি একটা ছিল না। শুরুতে কয়েকজন গাইগুই করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যখন দেখা গেল এই ছুটি কেবল সপ্তাহ দুয়েকের না, বরং অনেক লম্বা সময়ের জন্য, সবাই নিয়মিত ক্লাসে এসেছে। আমাদের অন্তত ৮০/৮৫% উপস্থিতি নিয়মিত ভাবেই ছিল। ইন্টারনেট নাই - এই এক্সকিউজটা খুব একটা বাধা হয়ে দাড়াই নাই। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থেকেই আমার ছাত্ররা ক্লাসে অংশগ্রহণ করেছে নিয়মিত। এখন কথা হল, থিওরি ক্লাস না হয় নিলাম, ডিজাইনে কিভাবে হবে? ছাত্রসংখ্যা নিয়েও কেউ কেউ ভাবতে পারেন। আমার জানা মতে আমাদের দেশেরর অন্যান্য স্থাপত্য বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষকঃশিক্ষার্থী অনুপাত ১ঃ৮ - ১ঃ১৫ এর মাঝে। এর বেশি হবার সুযোগই নাই আইএবির নির্দেশনাক্রমে। আমাদেরও গড়পড়তা ১ঃ১২ এর মত শিক্ষকঃছাত্র অনুপাত রাখা হয়। ছাত্রদের আগ্রহ ঠিক থাকলে একজন শিক্ষক এর পক্ষে ১০/১৫ জনকে গাইড করা অসম্ভব কিছু নয় বলে আমার মনে হয়।  ইতোমধ্যে আমাদের ৫/১(হাসপাতাল) ও ৪/২(হাউজিং) ব্যাচ অনলাইনে জুরি করে ফেলেছে। আর এই করোনাকালীন ক্লাস গুলোতে আমাদের পোলাপান যে কেবল অনলাইনে ক্লাস করেছে তাও না, অনলাইনে পহেলা বৈশাখ, মা দিবস ইত্যাদি অনুষ্ঠানেও তারা নিজ নিজ বাসা থেকে অংশগ্রহণ করে। ইনফারমাল স্টুডিও এনভায়রনমেন্ট অনেক আগে থেকেই আমাদের সঙ্গী বলা চলে।

যাইহোক, একটা ডিজাইন সম্পূর্ণভাবে অনলাইনে ভেডেলপ করা, সময় পেলে কিছুক্ষণ এর জন্য ঢু মেরে গেলে খারাপ লাগবে না। (সময় কাটানোর জন্য জুরির কোপাকুপি দেখা একটা আনন্দদায়ক  কাজ)

:)

No comments

Powered by Blogger.