হ্যাপি স্থাপত্যইং-৩||সজল দত্ত


একেকজন এর সফলতার গল্প শুনে আমরা ইন্সপায়ারড হইতে চাই। মোটিভেশনাল স্পিকাররা তাই-ই করেন। নিজের অথবা বাকিদের সফলতার কথা বলেন। আমরাও নেট ঘেটে ঘুঁটে এসব দেখি আর স্বপ্ন বুনি। আমি নিজেও অনেককে ফলো করার চেষ্টা করি।

কিন্তু আমরা যখন একটা সিস্টেম নিয়ে কথা বলতেছি তখন মনে হয়, এভাবে ৫ জনের উদাহরন দিয়ে ৫০০ জনকে বুঝ দেয়াটা উচিত না।
আই মিন-  সবাই একটা স্বপ্ন নিয়া-ই আসছে এখানে, স্বপ্ন না থাকলেও সমস্যা নাই, কেউ কেউ হয়ত স্রেফ টাকা কামানোর জন্যই আসছে, সেটাও একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য। সবাই চায় তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে, কেউ পারে, কেউ আবার পারেনা। এই পথটা মসৃণ না, আমরা জানি। তাই বলে নামে মাত্র বেতনে বছরের পর বছর কাজ করে যেতে হবে, এটা একটা মানদণ্ড হতে পারেনা।
তারমানে, আমি বলতেছি না যে পাস করেই ৪০-৫০ হাজার টাকার চাকরী ধরিয়ে দেয়া উচিত। নিতেন পক্ষে ২০-২৫ তো হতেই পারে!! সেটাও কিন্তু কম স্ট্রাগলের না।

কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে, সেটা রীতিমত “বুলিং”
আরেহ, কাজ শেখো, কাজ শেখো, তোমার বয়সে আমিও বহুত ঘাঁটের পানি খাইয়া তারপরে এই জায়গায় আসছি। আমি পারলে তুমি পারবা না ক্যান?? সে নিজে যা ফেস করে আসছে জুনিওরকেও তাই ই ফেস করতে হবে। সিনিওরদের এ জাতীয় কথায় এটাই প্রমান পায় যে, আমাদের কমিউনিটি ১০-১৫ বছর আগেও মগের মুল্লুক ছিল এবং সবকিছু ঠিক থাকলে সবার দোয়ায় এভাবে মগের মুল্লুক হয়েই থাকবে। কেননা, সুশীল- কুশীল মিলে মোটামুটি শতকরা ৮০-৯০ ভাগ আর্কিটেক্ট-ই এই প্রকারের।

“কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে”, “সবুরে মেওয়া ফলে” অথবা “দক্ষতা থাকলে একদিন সাফল্য আসবেই”, এজাতীয় মোটিভেশনাল কথা তো অবশ্যই সঠিক, আমরা জানি। ইভেন মারাত্মক কিছু সফলতার উদাহরনও আছে। সেগুলো কে শক্তি বানিয়েই ডেইলি যুদ্ধ কইরা যাইতেছি আমরা। সুন্দর ভবিষ্যতের আশায়।
বাট এখানে পয়েন্টটা হচ্ছে- টোটাল সিস্টেমটা। এরকম বুলশিট মার্কা সিস্টেম আমরা বছরের পর বছর মেনে নিছি দেখেই আজকে তেলা মাথা আরও বেশি চকচক করতেছে আর আমগো মাথার চুল ঝইরা স্টেডিয়াম হইতেছে। এই সিস্টেমটা ঠিক না, অমানবিক এবং স্বৈরাচারী। এটার পরিবর্তন দরকার।

এবং অবশ্যই আমাদের উচিত IAB কে এই বিষয়ে একটা Proposition দেয়া। কিন্তু আমার মনে হয় কি, ভাই, এইযে উত্তাপ এখন বইতেছে, প্যান্ডেমিক গেলে এসব আর থাকবে না। দ্বিতীয়ত, যারা নবীন আর্কিটেক্ট আছেন, তারা সংখ্যায় খুব বেশি না এবং তাদের কথার গুরুত্ব ঐ সেমিনারের দর্শক-সারী অব্দিই সীমাবদ্ধ। তাদের থোরাই কেয়ার করে IAB অথবা পশ-লোকেরা।

আর যারা ১০-১২ বছর ধরে এই প্রফেশনে আছেন, মোটামুটি একটা অবস্থান তৈরি করেছেন, একদম খুব ভালো না হলেও, যুতসই একটা অবস্থান। মার্ক করে রাখেন লাইনটা- তারা জীবনেও এই ইস্যুতে কথা বলবে না, হয়ত দুই-একজন থাকতে পারেন বাট বাকিরা কেউ-ই কেয়ার করবে না। কারন কেউ চাইবে না, তার অবস্থানটা উপরের মহলে নেগেটিভলি মার্কড হোক।

এভাবেই দিন দিন গ্র্যাজুয়েট বাড়বে, অসুস্থ প্রতিযোগিতা বাড়বে, ধনীদের ধন বাড়বে, আর আমাদের মত মিডিওকোরদের মানসিক হীনমন্যতা বাড়বে। তাতে তাদের কিসসু যাবে আসবে না...!

1 comment:

Powered by Blogger.