এখন আমাদের রয়েছে যোগ্য স্থপতি, পরিকল্পনাবিদ ও বহু যোগ্যতর বিশেষজ্ঞ। যা নেই, তা হলো সরকারি কর্মচারীদের মেধা। সরকারে মেধাশূন্যতার প্রক্রিয়া তাঁর দূর্নীতি, লেজুড়বৃত্তি ও নিয়োগ বানিজ্যের মধ্য দিয়ে বহু আগেই সূচিত হয়েছে। দেশের ভালো তথা মানসম্পন্ন কিছু করার যোগ্যতা সরকারে আর কিছুই অবশিষ্ট যে নেই, তার প্রমান প্রায় সমস্ত গৃহীত প্রকল্পে প্রকটভাবেই প্রকাশিত।
স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরে আমাদের দেশীয় যোগ্য সব স্থপতি ও পরিকল্পনাবিদদের সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে কেন জাপানিজ ফার্ম কে দিয়ে মাল্টিলেয়ার ট্রানজিট হাব ডিজাইন করতে হবে?
নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য হলেও তো এই নক্সা প্রনয়নের কাজে দেশীয় কোম্পানির সাথে যৌথ অংশীদারিত্বের শর্তে আন্তর্জাতিক নক্সা প্রতিযোগিতার আয়োজন করাই সবচেয়ে সমীচীন হতো!
সেক্ষেত্রে নক্সা চাহিদায় স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সুরক্ষা ও উপযোগিতার নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি সন্নিবেশিত করে নক্সা প্রতিযোগিতা আহ্বান করা সম্ভব।
এই ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া মডেল জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শনীর মাধ্যমে জনগনের মতামতও গ্রহণ করা যেত। একটা রাজধানী শহরে এতো বড় একটা পরিবর্তনে জনগনের মতামত সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করাটা কেবল স্বৈরাচারী মনোভাবেরই এক নগ্ন প্রকাশ। পৃথিবীর খুব কম সভ্য দেশেই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার এমন অদ্ভুত কান্ড সম্ভব হয়ে থাকে।
নগর কর্তৃপক্ষের অবশ্যই মনে রাখা দরকার, এই রাজধানী নিয়ে একছত্রভাবে ছিনিমিনি খেলার দ্বায়িত্ব তাঁদের কেউ দেয় নাই। সেই অধিকারও তাঁদের নেই।
এই রাজধানী এখানে বসবাসকারী সবার এবং সর্বোপরি এদেশের জনগণের। অযাচিত দ্বায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যাঁরা আজ বিদেশী পরামর্শ ও অর্থের উপর ফপরদালালি করছেন, স্বাধীনতার অর্থটুকু বোধকরি তাঁরা কোনদিনই উপলব্ধি করবেন না।
ঢাকা শহরের অনেক ইতিহাস ও ঐতিহাসিক স্থাপনার ইতোমধ্যেই আপনারা বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছেন। টিএসসি ও কমলাপুর স্টেশন যদি এরপরও আপনাদের অপকর্মের কারনে ধ্বংস হয়, এর জন্য জবাবদিহিতা একদিন আপনাদের করতেই হবে।
No comments:
Post a Comment