Saturday, August 1, 2020

চলমান পরিস্থিতি ও স্থাপত্যের ছাত্রছাত্রীদের কিছু বিশ্লেষণ ও উপলব্ধি -স্বপ্নীল

বিশ্ববিদ্যালয়: চলমান পরিস্থিতি ও স্থাপত্যের ছাত্রছাত্রীদের কিছু বিশ্লেষণ ও উপলব্ধি।
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু,যা নিয়ে কিছু গঠনমূলক আলোচনা,আত্নবিশ্লেষণ ও উপলব্ধির প্রয়োজন আছে।মাস্টারপ্ল্যান হলো প্ল্যানিং এর পরিভাষায় এমন একটি উপাদান যা সময় ও চাহিদার সাথে পরিবর্তন বা পরিমার্জন এর প্রয়োজন আছে।কেবলমাত্র রাস্তা এবং বিল্ডিংগুলো ছাড়াও এ মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত থাকে প্রাকৃতিক অন্যান্য উপাদান (যেমন-টিলা বা ছড়া),গাছগাছড়া এবং আনুষাঙ্গিক বিষয়।
 
২. এ পর্যন্ত আমাদের ক্যাম্পাসের টিলাগুলো মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং সংরক্ষিত ইকোলজিকাল সাইট হিসেবে ধাপে ধাপে উন্নয়ন চলছিলো,যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি বড় সম্পদ হবার দাবি রাখে।সেক্ষেত্রে টিলা নিধন করে যেকোনো অবকাঠামো নির্মাণ একটি অপরিকল্পিত,অযৌক্তিক এবং অদূরদর্শী পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হয়।বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫(২০০০ সালে সংশোধিত) অনুসারে এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
উদাহরণ দেয়া যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোর সংরক্ষণ এবং অভয়ারণ্য তৈরি,যা পুরোদেশেরই একটি সম্পদে পরিণত হয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে টিলা কেটে হল কিংবা যেকোনো অবকাঠামো নির্মাণ সম্পূর্ন সাংঘর্ষিক পদক্ষেপ।
৩. প্রাকৃতিক ছড়া,সাময়িক জলাভূমি (seasonal wetland),কিলোরোড সংলগ্ন লেক সবই পানিপ্রবাহের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ।এক্ষেত্রে জাহানারা ইমাম ছাত্রীহলের ঠিক সামনের অবকাঠামোর কারনে পানি অন্য কোথাও প্রবাহিত হবে কি?হলে কোন জায়গায়?অপরিকল্পিতভাবে এই সিদ্ধান্তগুলো ভবিষ্যতে আরো বড় সমস্যার তৈরি করবে যাতে ক্ষতি হবে প্রাণ-প্রকৃতিরও।এজন্য একটি Collaborative মাস্টারপ্ল্যান হলে তাতে ছড়াগুলোর যথাবিহিত উন্নয়ন বা সংরক্ষণ সম্ভব।
৪. তড়িৎ সিদ্ধান্তে ১০-১৫ বছরের পূর্নাঙ্গ গাছ কেটে ফেলা বেদনাদায়ক। শোভাবর্ধক এ গাছগুলো প্ল্যান করেই লাগানো হয়েছিলো,যদি আবার এখানে নতুন করে গাছ লাগানোও হয় তা যে পরবর্তীসময়ে অন্য কোনো সিদ্ধান্তে কেটে ফেলা হবে না,তার কী নিশ্চয়তা।সেক্ষেত্রে সমন্বিত উপায়ে পরিবেশ এবং অবকাঠামো নিয়ে কাজ করে বিভাগগুলোকে একত্র করে তাদের তথ্য উপাত্ত ব্যবহারের মাধ্যমে একটি সার্বিক মাস্টারপ্ল্যান করার আহবান জানানো হচ্ছে।যাতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে প্রত্যেকটি ছড়া থেকে শুরু করে প্রতিটি গাছ।শাবিপ্রবির মাস্টারপ্ল্যান এবং অবকাঠামো বা ল্যান্ডস্কেপিং নিয়ে প্রতিনিয়তই স্থাপত্য বিভাগে কাজ করানো হচ্ছে শিক্ষাক্রমভুক্ত কাজ হিসেবেই।এক্ষেত্রে মাস্টারপ্ল্যান প্রজেক্টটিতে বিশ্লেষণ এবং তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে সুনিপুণভাবে।এইসব তথ্য বিশ্লেষণ করে দেশবরেণ্য স্থপতি-প্ল্যানার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর সহযোগিতায় সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে ক্যাম্পাসের উন্নয়ন চাই যা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্যও একটি মাইলফলক হবে।

No comments:

Post a Comment