Sunday, October 10, 2021

ব্যাঙের ছাতার মতো কনসালটেন্ট অফিস যে হারে বেড়ে চলছে?

মো: সাহেদঃ আমাদের আশেপাশে ব্যাঙের ছাতার মতো কনসাল্টেন্ট অফিস তথা পরামর্শ দাতা যে হারে বেড়ে গেছে তার সমান মনে হয় ভবন ও হচ্ছে না!

pictures©Low Donut.uk


আর এখন ত Autocad পারলে ইঞ্জিনিয়ার! আর ডিজাইন শিখা লাগবে না!


 অপরদিকে স্থাপত্য ডিজাইন বা কাঠামোর ডিজাইন কি তা ও জানে না!শুরুতে বলবো সাইটে জব করা মানে শুধু Civil Engineering না,...কারণ একটা প্রজেক্ট এর প্রথম ধাপ হচ্ছে- ডিজাইন করা বা পারা! এখন ডিজাইন না জেনে Autocad এর শিখে লাইন দিয়ে ওয়াল তুলতে পারা বা সাইট সুপারভিশন করা মানে কনসালটেন্ট না!


একটা মনগড়া স্থাপত্য  ডিজাইন বা কাঠামোর করার ফলে..

১/ওভার ডিজাইন করা হয়-৫-৬ লাখ টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়

২/Architecture functions সলভ হয় না!

৩/সাইট ওরিয়েন্টেশন এএনালাইসিস করার ফলে ভেপসা গরম অনূভুত হয়..

৪/Space wastage হয়

আর পরে বদনাম টা হয়, ইঞ্জিনিয়ার সমাজের! 


অনেকে Consultant  অফিসের কাজ কি তা ও বুঝে না,নাম দিয়ে দেয় অমুক কনসালটেন্ট অফিস দিয়েছি.. তাই আজকে বলছি কনসালটেন্ট অফিস নিয়ে...

 ডিজাইনের কিচ্ছু  না বুঝে  তারা ও  আন্দাজের উপর প্লান ডিজাইনের কাজ করে..পরে বদনাম হয় পুরা ইঞ্জিনিয়ার সমাজের!  এখানে কেউ কিছু বলার নাই,এতে করে আমাদের স্থাপত্য বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার  দের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ার সম্ভাবনা আছে...

কন্সাল্টেন্টঃ  

=============

তাদের কাজ প্রকল্পের ডিজাইন করা এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ডিজাইন প্রদান করা যে অনুয়ায়ী কাজ করতে হবে। তারাই স্ট্রাকচারাল, আর্কিটেকচারাল, ইলেক্ট্রিকাল, প্লাম্বিং এবং অন্যান্য সকল ড্রয়িং সাবমিট করবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজের সময় যদি কোন ড্রয়িং পরিবর্তন করার দরকার পড়ে তাহলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবহিত করার মাধ্যমে তারা সেটা প্রয়োজন অনুসারে পরিবর্তন করে থাকে। কন্সাল্টেন্ট বিদেশী কিংবা দেশী উভয়ই হতে পারে।

তাদের উল্লেখযোগ্য কাজের প্রধান কাজ হচ্ছে তারা প্রতিটা কাজের মনিটরিং করবে। কন্সাল্টেন্টদের ভেতর যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ ভাগ করা থাকে। তাদের ফিল্ড সুপারভাইসারদেকে সাইটে কাজ সুভারভাইস করতে হয়। ঠিকমতন মালামাল কাজে দেওয়া হচ্ছে কি না সেটা সাইট ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে সাথে কন্সালটেন্ট এর তারাও খেয়াল রাখে।

প্রতিটি ঢালাইয়ের আগে তারা চেক করেন রড ঠিকমতন ড্রয়িং এবং ইঞ্জিনিয়ারিং নীতি অনুযায়ী বসানো হয়েছে কি না, শাটার ঠিকমতন বসানো হয়েছে কি না। এবং ঢাকাই এবং সেট আপের পরেও চেক করেন আর্কিটেকচারাল ড্রয়িং অনুযায়ী কাজটা যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে কি না। ফিনিশিং ঠিকমতন হয়েছে কি না। কন্সট্রাকশণের ইঞ্জিনিয়ারদের পাশাপাশি  কন্সালটেন্টরাও সেটার খেয়াল রাখেন।

⬛️ কন্সাল্টেন্সি ফার্মের বিভিন্ন অংশঃ

===========================

ক)  স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারঃ কনসালটেন্সি ফার্মে থাকেন স্টাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার। তাদের কাজ মাটি পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে সাব স্টাকচার এবং সুপারস্টাকচার ডিজাইন করা।

খ) ড্রাফসম্যানঃ ডিজাইনগুলোকে অটোক্যাডে আঁকাআঁকির কাজ করেন ড্রাফসমান।  দ্বিমাত্রিক, ত্রিমাত্রিক নকশার কাজও ড্রাফসম্যানরা করে থাকেন।

গ) আর্কিটেক্টঃ   

আর্কিটেক্ট এর কাজ হচ্ছে  নকশা করে দেওয়া। নির্দিষ্ট জায়গার উপরে কিভাবে প্রকল্প হবে, কি কি কিভাবে থাকবে সেসকল ডিজাইন করা, নকশার ত্রিমাত্রিক এবং দ্বিমাত্রিক (থ্রিডি এবং টুডি) ডিজাইন করা কাজ করে থাকেন আর্কিটেক্ট। সম্পূর্ণ প্রকল্প করলে কি লাভ হবে, কোথায় কি প্রকল্প কিভাবে করলে কি ফলাফল পাওয়া যাবে সেটার কাজ আর্কিটেক্ট এর।  ...

আগে শিখুন তারপর এপ্লাই করুন..একটা plan করা মানে শুধু  Cad এ  ওয়াল দিয়ে রুম বানানো না! এটা একটা পরিকল্পনা!,আর এটাকে কম টাকায় বা কম সময় করলে নিজেই পরে জবাব দিহিতার সম্মুখীন হবেন!কারণ-

একটা ডিজাইন এ...

1/Functioning Analysis

2/Aesthetic analysis

3/Cost optimis 

4/Local material selection

5/site orientation

6/structure system

7/construction procedure সহ

 অনেক কিছুই বিবেচনা করতে হয়!

শুরুতে বলি সব Structure Engineer এই civil Engineer আর সব Civil engineer এই structure Engineer না!

..সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর মানে এই নয় যে শুধু সাইট ভিজিট করা...তাই অযথা ডিজাইন ক্যালকুলেশন না পেরেও আন্দাজের ওপরে বিল্ডিং এর ডিজাইন দিতে যাবেন না।

আপনি যদি WSD / USD কোন মেথড ই  না পারেন , যদি বিল্ডিং এর লোড ক্যালকুলেশন না পারেন, যদি মাটির বিয়ারিং ক্যাপাসিটি কি সেটা খুব ভালোভাবে আপনার মাথায় না ঢুকে, ফুটিং এর ধরন, ফুটিং এর ডিজাইন ক্যালকুলেশন, কলাম ডিজাইন, বীম ডিজাইন, সিঁড়ি ডিজাইন, ছাদ ডিজাইন এছাড়াও বিল্ডিং নির্মাণ কাজের সাথে জড়িত কোন ডিজাইন ই আপনি না পারেন, কিংবা অল্প অল্প পারেন, 

যদি বিএনবিসি কোড খুব ভালোভাবে না বুঝেন, যদি খুব বেশি সিজমিক এনালাইসিস না বুঝেন (যেসব বিল্ডিং এর জন্য সিসমিক এনালাইসিস প্রয়োজন),

যদি মাটির bearing capacity সম্পর্কে আপনার ধারনা না থাকে,

অর্থাৎ এক কথায় আপনি আন্দাজের উপর ডিজাইন করছেন, তাহলে কি আপনি যেই বাড়ির মালিক তার অনেক কষ্টের পরিশ্রমের টাকা দিয়ে বিল্ডিং বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার ওপর জুলুম করছেন না?

আমি এ ধরনের অনেক ইঞ্জিনিয়ার এর ডিজাইন দেখেছি, বস্তুতপক্ষে  ডিজাইন কে ইগনুর করে সাইট ভিজিট কে গুরুত্ব দেয়!

আমরা সকলেই জানি WSD method ডিজাইনের চেয়ে USD method ইউজ করে ডিজাইন করলে খরচ অনেক কম পড়ে।

ঠিক একই রকম ভাবে বীমের মোমেন্ট বের করার অনেকগুলো মেথড আছে যেগুলো ব্যবহার করলে বিল্ডিং ডিজাইন ইকনোমিক্যালি অনেকটাই সেভ করা যায়।

এখন আসল কথা হচ্ছে আপনারা যেখানে বিল্ডিং এর লোড ক্যালকুলেশন ই পারেন না, সেখানে ডিজাইন তো অনেক দূরের কথা, 

আবার অনেকে ডিজাইন পারেন কিন্তু লোড ক্যালকুলেশন পারেন না, এনালাইসিস পারেন না।

এক কথায় খুবই বাজে পরিস্থিতি আমাদের দেশের।

আমি কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ারের ডিজাইন এনালাইসিস করে দেখেছি, ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রেই ওভার ডিজাইন করেছেন।

আর এতে করে মালিকপক্ষ ইকনোমিক্যালি অনেক বেশি লস এর মধ্যে পড়েছেন, আর মালিকপক্ষের লস মানে দেশের লস।

কেননা যে বিল্ডিং টা মাত্র এক কোটি টাকা দিয়ে হয়ে যাইতো ঠিক একই বিল্ডিং এর ডিজাইন এর কারণে 20 লক্ষ টাকা বেশি লাগে । যেখানে আটটা স্টিল দিলে এনাফ ছিল সেখানে দশটা বারোটা 14 টা পর্যন্ত স্টিল দেয়া হয়েছে, সব সেক্টরে এই পরিমাণটা বাড়ানো হয়েছিল। বেস, কলাম, বিম, ছাদ অর্থাৎ সব সেক্টরেই।

গ্রামে মাত্র 2000 স্কয়ার ফিটের বিল্ডিং কোনরকমে তিন তলা ফাউন্ডেশন দিয়েছেন মালিক, আপাতত একতলা কমপ্লিট করবেন, সেইসব বিল্ডিংয়ে দেখেছি শুধুমাত্র ডিজাইন সংক্রান্ত কারণে প্রতি তলায় 1 থেকে 2 লাখ 3 লাখ টাকা পর্যন্ত বেশি খরচ হচ্ছে।

অর্থাৎ তিন তলা মিলে হিসাব করলে 6 থেকে 9 লাখ টাকা পর্যন্ত বেশি যাচ্ছে।


অতএব সব সব জেনে বুঝে Consultant অফিস দিবেন!না হয় মানুষ আর্কিটেক্ট /ইঞ্জিনিয়ার সমাজের উপর আস্থা হারাবে!বদনাম পুরা সমাজের!

No comments:

Post a Comment