Thursday, December 3, 2020

ভাস্কর্য দিয়ে শুরু হলো মাত্র-তারিকুল লাভলু

এক্ষুনি প্রতিরোধ না হলে এরপর এই আঘাত আসবে আমাদের শিল্পকলা, চলচ্চিত্র, সঙ্গীতে। আসবে কাব্য ও সাহিত্য বিষয় ও সেসবের রচনায়। আর পরিশেষে আসবে আমাদের আবহমান চলনে, বলনে ও যাপিত জীবনের নানা অভ্যাসের উপরও। এই দূর্গতির জন্য এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।




যে শিক্ষায় বলীয়ান হয়ে তাঁরা এ কাজ করবে, নিজের পুণ্য লাভের আশায় সেই শিক্ষাকেই সামাজিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করে এতোদিন ধরে সবাই পরিতৃপ্ত হতে চেয়েছি। দরিদ্র, এতিম ও অবহেলিতদের ঠেলে সেই শিক্ষায় পাঠিয়েছি। আমাদের বোধটা এমন ছিল, যেন প্রচলিত শিক্ষায় ওদের শিক্ষিত করে তুললে তাতে পুণ্যতার কিছু নেই। 


এদেশের অধিকাংশ বিত্তবানরা কী এক অদ্ভুত কারণে তাঁদের অসৎ উপার্জনের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে আত্মসাৎকৃত অর্থের কিয়দাংশ ব্যয় করে মদ্রাসা প্রতিষ্ঠায়। স্কুল প্রতিষ্ঠায় কিন্তু নয়! বিজ্ঞান শিক্ষা, গবেষনা ইত্যাদির পিছনে তো নয়ই। 


শতকোটি টাকা আত্মসাৎকারী ধরা পড়লে দেখা যায় তাঁরা কপালে সেজদার ছাপ! বিত্ত অর্জনে শিক্ষা যতই চাতুরীর কাছে হেরেছে, পরকালীন শাস্তি লাঘবের অভিপ্রায় ততই প্রবলতর হয়েছে। আর প্রসারিত হয়েছে ধর্মীয় শিক্ষার নামে এক খণ্ডিত অর্ধশিক্ষা ব্যবস্থা। 


আর এভাবেই এক অন্ধকারাচ্ছন্ন শিক্ষা ক্রমাগত কালিমা লেপন করে চলেছে দেশের লক্ষ লক্ষ কোমলমতি শিশু কিশোর তরুনদের উদীয়মান চিত্তে। যে শিক্ষায় প্রশ্ন করা নিষেধ। মেনে নেয়াটাই বাধ্যতামূলক। যে শিক্ষা একটা ভিনদেশী ভাষা কেবল পড়তে শেখায়, ভাষাটা শেখানোয় অপারগ। রূপকথার মত করে গল্প শোনায়, কিন্তু তার সামাজিক প্রেক্ষিত ও কার্যকারণ নিয়ে মাথা গবেষণায় অনিচ্ছুক। যে শিক্ষার পুরো ব্যবস্থা জুড়ে এক আলোর গল্পটাই আছে কেবল, আলোক অনুসন্ধানের কোন দিকনির্দেশনা নেই। আর যেই নির্দেশিত পথে আলোক প্রাপ্তির কথা বলা হয়, সেটা নিজেরাই বিশ্বাস করে না। করলে অসৎ অর্জিত অর্থ গ্রহণে শুরুতেই তাঁদের সর্বৈব অনিহা থাকা উচিৎ ছিল।


বিগত পঞ্চাশ বছরে এই খণ্ডিত শিক্ষায় অর্ধশিক্ষিতদের সংখ্যা কেবল বেড়েছে। আর এখন তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবার পথে।


খুব শিগগিরই আমরা পতিত হতে চলেছি এক পশ্চাৎপদ জীবনব্যবস্থার অন্ধকার গহ্বরে। 


জাতি হিসেবে এটা হচ্ছে আমাদের কর্মফল।

©স্যারের ফেসবুক পেজ থেকে সংগ্রহীত.....


1 comment: