COVID 19 এর প্রভাবে প্রতিদিনই মানুষ ঢাকা শহর ছাড়ছে||মুহাম্মাদ ফাইয়াজ উল হক||


সামনের মাসগুলোতে এই চিত্র আরও প্রকট হবে। বর্তমান অবস্থা চলমান থাকলে ২০২০ সালের শেষ নাগাদ ২০-৩০% মানুষ ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হবে !
.
তাই আগামী ৫ বছর নতুন কোন বাড়ির বিল্ডিং কন্সট্রাকশন খুব একটা প্রয়োজন হবে না।এই ধারাবাহিকতায় রিয়েল এস্টেটের সাথে সম্পৃক্ত ইন্ডাস্ট্রিগুলোও ধাক্কা খাবে।
.
ঢাকায় প্রয়োজনীয় যথেস্ট রেন্টাল স্পেস রয়েছে। ঢাকা শহরের কমার্শিয়াল স্পেস এবং রেসিডেন্সিয়াল স্পেস মিলিয়ে ৩০% স্পেস ফাকা পড়ে থাকবে। যারা স্পেস রেন্ট নিয়ে থাকেন, তারাও এক বা দুই ধাপ করে পিছিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করবেন। এতে করে, বছরের শেষ নাগাদ খালি স্পেসের ভাড়া কমপক্ষে ২৫-৩০% কমে আসতে পারে।
.
ইন্টেরিয়র ডিজাইন ও ডেকরেশন সার্ভিস প্রভাইডার কোম্পানিগুলোর চাহিদা বাড়বে ।
.
COVID-19 Pandemic এর কারনে আমাদের বাড়ি-ঘরের পরিবেশ এর উপর যেমন প্রভাব পড়বে ,তেমনি ইন্টেরিয়র ডিজাইন পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনবে।
.
COVID-19 Pandemic মানসম্পন্ন ইন্টেরিয়র ডিজাইনের গুরুত্ব বুঝাতে বাধ্য করেছে ।মানসম্পন্ন ইন্টেরিয়র ডিজাইন মানে শুধু সুন্দর এবং ডেকোরেটিভ জিনিস তৈরি করা না। অভ্যন্তরীন স্বাস্হ্যসম্মত ও নিরাপদ জীবনযাত্রার মান নির্ধারন করে এবং বাড়ির সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করে।

COVID-19 Pandemic সংকট ও Creative Interior Design Trend :

স্মার্ট হোম অফিস:
লকডাউনের কারনে মানুষ ঘরে বসে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। যদিও ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে এই প্রবনতা থাকা সত্ত্বেও, এই সংকটের আগে স্মার্ট-ওয়ার্ক (ঘরে বসে কাজ) খুব সাধারন বিষয় ছিল না।

কোম্পানীগুলোও এখন বিশ্বাস করতে শুরু করছে, ঘরে বসে কাজ করার মডেলটি কতটা সহজ এবং কার্যকরী।
খুব শিঘ্রই আমরা দেখতে পাবো, প্রতিটি ঘরের কোনায় একটি করে ডেডিকেটেড হোম-অফিস থাকবে। আর এখানে উপযুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্ল্যান এবং ডিজাইন এর প্রয়োজন হবে। যখন ঘরে বসে অফিসিয়াল কাজে প্রচুর সময় ব্যায় হবে, তখন এই স্পেসটি হতে হবে বাকি রুমগুলো থেকে আলাদা, যাতে করে প্রডাক্টিভ কাজের জায়গা এবং রিল্যাক্সের রুমগুলো বিচ্ছিন্ন থাকে।
.
হোম-অফিস ইন্টেরিয়র ডিজাইনে নতুন কিছু চাহিদা যুক্ত হবে, ১.আরামদায়ক অফিস ফার্নিচার,
২.ভাল লাইটিং এবং
৩.পর্যাপ্ত স্টোরেজ ব্যবস্থা।

এছাড়া আরও যে বিষয়গুলো যুক্ত হবে – ভিডিও কল এর জন্য উপযুক্ত ডিজাইন, যতটা সম্ভব সাউন্ডপ্রুফ স্পেস এবং মনোরম পরিবেশ।

দেশীয় লোকাল পন্যের ব্যবহার :
লোকাল ডিজাইন এবং কারুশিল্প একটি ট্রেন্ডে পরিনত হবে, কারন সরকার চাইবে দেশীয় অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে, আমদানিকৃত পন্যের (Made in China, India,…) যায়গায় লোকাল পন্য উৎপাদনে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে। সবাই বুঝতে পারবে উৎপাদনের ক্ষেত্রে অন্য দেশের উপর তারা কতটা নির্ভরশীল ছিল, যা সাসটেইনেবল ছিল না। ইন্টেরিয়র ডিজাইন এবং উৎপাদন প্রসেসে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে যার মধ্যে স্বয়ংকৃয়ভাবে একটি দেশীয় ফ্লেভার পরিলক্ষিত হবে।

নতুন কিছু চাহিদা :

০১. Landscape architecture বা সবুজের ব্যবহার বাড়বে, বাড়ির ছাদে,বারান্দায়,ওয়ালে গার্ডেনিং এর প্রবনতা দেখা যাবে। এটা অনেকটা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে।

০২. স্বাস্থকর ইন্টেরিয়র স্পেস এর গুরুত্ব বাড়বে। এয়ার পিউরিফায়ার এবং ওয়াটার ফিল্টারেশন সিস্টেমে এর প্রয়োজনীয়তা বাড়বে।

০৩. পরিচ্ছন্নতার কাজে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন হবে। অটো-ক্লিনিং ফার্নিচার টেকনোলজি (যেমন: কিচেন কেবিনেট এর ভিতরে ইন্টেগ্রেট থাকবে) তৈরি হবে।

০৪. বর্তমান কার্পেটটি পরিবর্তিত হয়ে সহজে পরিষ্কার করা যায় এমন কার্পেট সেট করা হবে। কারন এখানে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস দীর্ঘ সময় অবস্থান করার সুযোগ পায়।

০৫. বেশিরভাগ বাড়িতে স্মার্ট টয়লেট খুবই সাধারন একটি ফিচার হবে। যেমন: অটো ক্লিনিং ফসেট, যেগুলো শুধুমাত্র কিছু ভিআইপি স্পেসে দেখা যেত।

COVID-19 সংকট দীর্ঘমেয়াদে আমাদের বসবাসের জায়গায় নতুন কিছু ইতিবাচক বিষয় নিয়ে আসবে।

No comments

Powered by Blogger.