প্রকল্পের নাম-রাখাইন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র

সংস্কৃতি বলতে কোনো গোষ্টীর সামাজিক অভ্যাস, ধর্ম, ভাষা, নৃত্য, সংগীত, শিল্প থেকে তাদের নিজস্ব সকল আচারকে বুঝায়। আর একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হল এমন একটি সংস্থা বা কেন্দ্র যা ঐ সংস্কৃতির প্রকাশ ঘটায় ও সংরক্ষণ করে।

কক্সবাজারের রামুতে রাখাইন সম্প্রদায়ের একটি খুব সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে। তবে দূর্ভাগ্যবশত তাদের সংস্কৃতি বা উৎসবের প্রকাশ ঘোটানো বা সংরক্ষিত করে রাখার মত নিজস্ব কোনো প্রতিষ্ঠান বা কেন্দ্র নেই। রাখাইনদের এই উৎসব বা সংস্কৃতির বিকাশ এবং সংরক্ষণের প্রয়াশেই এই “রাখাইন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র” যা একান্তই তাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে।
রাখাইনদের উৎসব সমূহ (বৈশাখী পূর্ণিমা,আষারি পূর্ণিমা, আশ্বিনী পূর্ণিমা, মাঘি পূর্ণিমা, নাই থাই পূর্ণিমা) মূলত পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে। প্রকল্পটির প্রস্তাবিত জায়গার পাশেই একটি রাখাইন বৌদ্ধ মন্দির থাকায় শুরু থেকেই পরিকল্পনা ছিল এমন একটি কেন্দ্র গড়ে তোলা, যা তাদের সংস্কৃতি তুলে ধরার সাথে মন্দিরটির স্থাপত্যশৈলীও ফুটিয়ে তুলবে। তাই প্রকল্পের সাথে মন্দিরের একটি প্রবেশদ্বার রাখা হয়েছে যেন এই কেন্দ্র থেকে মন্দিরটি দৃষ্টিগোচর হয়।

নৃত্য হল রাখাইন সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য অঙ্গ। এমনকি রাখাইন সম্প্রদায়ে নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাখাইন মেয়েরা হাতে মোমবাতি নিয়ে নৃত্য পরিবেশন করে থাকে।
রাখাইনদের বাড়িগুলো সাধারণত স্থানীয় উপকরণ যেমন – বাঁশ, কাঠ, গোলপাতা ইত্যাদি দিয়ে তৈরি। এই প্রকল্পের গৃহ নির্মাণের উপকরণগুলো স্থানীয় ঐতিহ্যের সাথে মিল রেখে নির্ধারণ করা হয়েছে। কাঠের প্রাচীর, থাম দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখার জন্য প্রতিটি থামের ভিত্তিতে কংক্রিট ব্যবহার করা হয়েছে। বাড়ির ছাদ তৈরীতে টালি ব্যবহৃত হয়, যা কাঠের বাঁকানো ফ্রেমের মাধ্যমে বসানো হয়।
তাই তাদের সেই ঐতিহ্য ধরে রাখা এবং তাদের সংস্কৃতির প্রতি সম্মান দেখানোই হল আমার এই প্রকল্পের প্রধাণ উদ্দেশ্য।

নাম-তাবাসসুম সুলতানা তামান্না
বিশ্ববিদ্যালয়-আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
স্টুডিও –X(থিসিস)
সাল-২০১৯

No comments

Powered by Blogger.